মানজুর আল মতিন
আইনজীবী ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব
“আজকে লগিবৈঠা অধিকার নিয়ে কথা বলার মানে এই নয়, কেউ ইসলাম ধর্ম পালনের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। বিশ্বে ইসলাম ধর্মের বহু ধারা যেমন আছে, আছে এই ধর্মে বিশ্বাসীদের মধ্যে ভিন্নতা।”
- মানজুর আল মতিন
আইনজীবী ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব
যে কোনো অভ্যুত্থান সমাজের মধ্যবিত্ত শ্রেণির মাঝে বিদ্যমান স্ট্যাটাস কো-কে চ্যালেঞ্জ করে। তারা যেভাবে জগতকে চিনে এসেছে তাতে ছেদ পরে, কখনো কখনো এই ছেদ তার আকাঙ্খা লণ্ডভণ্ড করে দেয়। কিন্তু আধুনিকতাকে টিকিয়ে রাখতে হবে - এই চিন্তার ফলে যে ফ্যাসিবাদ মধ্যবিত্তের মননে বেড়ে উঠে তা এত সহজে মনন - রাষ্ট্রের গঠন ছেড়ে যায় না।
আমরা ইতিহাস ভুলে যাই, ইতিহাস সবসময় দেখিয়েছে অধিকার কখনো একা একা থাকে না। একজনের অধিকার মানেই অপরের অধিকার খর্ব করা। এইটা হইল আধুনিক “স্বাধীনতা”র মজ্জাগত সুরত। বিশ্বে তাকিয়ে দেখেন, লগিবৈঠা অধিকার কেবল তখনই কায়েম হবে যখন আপনি এর অপজিশান দমন বা বন্ধ করে দিবেন। ১৬ বছরের স্কুল ছাত্রকেও আমেরিকাতে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে ‘লিঙ্গ কেবল দুইটি - নারী ও পুরুষ’ বলার অপরাধে। বিশ্বে তাকায়ে দেখেন, ইজ্র-মার্কিন আগ্রাসনের অন্যতম অনুসঙ্গ লগিবৈঠা রাইটস। পশ্চিম আপনাকে যখন অধিকারের বয়ান শেখাবে, সভ্যতা শেখাবে - এর মানে তারা আপনাকে বাধ্য করবে সেটা মেনে নিতে। শিক্ষা, কূটনীতি, স্যাংশান, বোমা-বুলেট দিয়ে।
ইসলাম বলেছে আমর বিল মারুফ ও নাহি আনিল মুনকার করতে। এই দায়িত্ব ব্যক্তির প্রত্যেকের ওপর যার যার সক্ষমতা অনুসারে। রাষ্ট্র কারো মুখ চাইপা ধরতে পারে না - এই ফালতু কথা যে বলে সে রাষ্ট্র কি বুঝেই না। আধুনিক রাষ্ট্র ঘরে ও বাইরে এর অপজিশানরে যেভাবে দমন করছে ও ভায়োলেনসকে যেভাবে মনোপোলাইজ করছে তা নজিরবিহীন। প্রি-মডার্ন স্টেটে এমন নজির নাই।
আজকে লগিবৈঠা অধিকার মেনে নেন, কালকে আপনার ছেলে সন্তান শরিফা হয়ে যেতে চাইলে তাকে বাধা দিতে পারবেন না, ইভেন বলতেও পারবেন না এটা ঠিক না। ঠোলা এসে ধরে নিয়ে যাবে। আর মতিন সাহেবরা আপনার ছেলে শরিফা হয়ে যাওয়ার পক্ষে লিগাল সাপোর্ট দিবে। সেকুলারবাদ আমাদের সহিনশীলতা শেখায় এর সামনে মাথা নত করে চলার জন্য, প্রতিবাদ সে সহ্য করে না। ধর্মের বহু ধারা আছে, সেক্যুলারিজমেও আছে। কিন্তু লগিবৈঠা নিয়ে ভিন্নমত রাখলে বাঙালি সেক্যুলার হওয়া যাবে না।
No comments: